ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসী অভিযান ও অর্থনৈতিক নীতিতে পরিবর্তন

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অভিযানে ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিদিন হাজার হাজার অভিবাসীকে গ্রেফতার করছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। গত দুই দিনে, শুধু নিউইয়র্ক শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় ২,০০০-এর বেশি অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে, যা বাইডেন সরকারের অধীনে গ্রেফতার হওয়া অভিবাসীদের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে, বাংলাদেশি অধ্যুষিত নিউইয়র্ক শহরে অভিযান শুরু হওয়ায় কমিউনিটির মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, ট্রাম্পের প্রশাসন তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে কার্যকরভাবে অবৈধ অভিবাসী ধরপাকড় চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ অর্থবছরে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন বা ১০ লাখ কোটি ডলার ব্যয় করেছে, যার মধ্যে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান ও ঋণ সহায়তা বরাদ্দ ছিল। তবে এই ব্যয়ের একটি বড় অংশ দেশবাসীর জন্য, আর একটি অংশ বিদেশী সহায়তার জন্য কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এছাড়া, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন, যার মাধ্যমে মার্কিন সরকারের অনুদান ও ঋণ সহায়তা বন্ধের পরিকল্পনা ছিল। তবে এই আদেশ কার্যকর হওয়ার আগে ফেডারেল আদালতের এক বিচারক এটি স্থগিত করেছেন। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেছেন, প্রশাসনকে এই আদেশ বাস্তবায়নের কোনো অধিকার নেই। তার মতে, এই আদেশ বাস্তবায়িত হলে লাখ লাখ মার্কিন নাগরিকের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা, দুর্যোগ সহায়তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বৃদ্ধ সহায়তা, এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।

তবে হোয়াইট হাউস এই আদেশ বাস্তবায়নের পক্ষে এবং প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন জনগণের করের অর্থ অপচয় হয়েছে এবং এর ফলে জনগণের দৈনন্দিন জীবনে কোনও উন্নতি হয়নি। তিনি দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নির্বাচনী নীতিমালা বাস্তবায়ন করছেন, যা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আরও সুশৃঙ্খল এবং কার্যকরী করে তুলবে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জোরদার করা হয়েছে। নিউইয়র্কে ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) সদস্যরা অভিযান চালিয়ে গত দুই দিনে হাজার হাজার অভিবাসীকে আটক করেছে, যা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে হওয়া গ্রেফতারের তুলনায় অনেক বেশি।